‘জমিজমা, গরু-বাছুর বেচছি। চড়া সুদে মহাজনের থ্যা ঋণ নিছি। তারপর সব মিলায়া তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা একই গিরামের আদম ব্যবসায়ী ফরহাদের হাতে তুইল্যা দিছি। আড়াই বছর হয়া গেল উনার কুনু খোঁজখবর নাই। ওই আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে পইড়্যা আইজ আমাগরে পরিবারডা নিঃস্ব হয়া গেছে।’
কথাগুলো বলতে বলতে গলা ধরে আসে পাবনার বেড়া উপজেলার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের যুবক আওয়াল মিয়ার। তার মতো একই অবস্থা উপজেলার আরও ২০ জনের।
প্রতারিত হওয়া কয়েকজন অভিযোগ করেন, প্রতাপপুর গ্রামের বাচ্চু শেখের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৩) কয়েক বছর মালয়েশিয়ায় চাকরি করে দেশে ফেরেন। এরপর ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানিতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিজ গ্রামের সহোদর আবদুল আওয়াল ও বাহাদুর মিয়ার কাছ থেকে তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা নেন। এ ছাড়া একই কথা বলে একই গ্রামের শুকুর আলী ও রাসেল, বসন্তপুর গ্রামের শাজাহান শেখ, রঘুনাথপুর গ্রামের সুরুজ মিয়া, জালাল মোল্লা, নগরবাড়ী ঘাটের সুরুজ কামার ও শাজাহান কামার, শহীদনগরের মনসুর আলীসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০ যুবকের কাছ থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা করে নেন। এভাবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা সংগ্রহ করার পর তিনি ওই যুবকদের মালয়েশিয়া না পাঠিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এ অবস্থায় আবদুল আউয়াল ও বাহাদুর মিয়াসহ প্রতারিত কয়েকজন টাকা ফেরতের জন্য তাঁর ওপর চাপ দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করেন। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিয়ে তিনি গা-ঢাকা দেন।
রঘুনাথপুর গ্রামের শাহীন শেখ বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমি বন্ধক রাইখ্যা আর ফেরি ঘাটের ছোড মুদি দোকানটা বিক্রি কইরা ফরহাদকে দেড় লাখ টাকা দিছি। এখন আমি নিঃস্ব হয়া পরিবারপরিজন নিয়া খায়া না খায়া দিন কাটাইতেছি।’
এদিকে টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতারিত কয়েকজন পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) লিখিত অভিযোগ করেন। এতে পরিষদ সালিসের আয়োজন করলে সেখানে ফরহাদের বাবা বাচ্চু শেখসহ পরিবারের কয়েকজন উপস্থিত হন। সালিসে টাকা নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় বাচ্চু শেখ ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রতারিত পাঁচ যুবককে ৪০ হাজার করে মোট দুই লাখ টাকা ফেরত দেন। সালিসে বাচ্চু শেখ জানান, ফরহাদ পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে গেছে। সেখান থেকে সে টাকা পাঠালে বাকি টাকা শোধ করা হবে।
পুরানভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এ এম রফিকউল্লাহ বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে ফরহাদ আমার এলাকার ছয়জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। অন্য এলাকার কয়েকজনের কাছ থেকেও সে টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে পরিষদে সালিসের আয়োজন করা হলে আমার মাধ্যমে ফরহাদের বাবা বাচ্চু শেখ পাঁচজনকে ৪০ হাজার করে টাকা ফেরত দেন। বাকিদেরও কিছু কিছু করে ফেরত দিয়েছেন বলে শুনেছি।’
এদিকে টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতারিতরা ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) কালীপদ পোদ্দারকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে কালীপদ পোদ্দার জানান, প্রাথমিক তদন্তে কয়েকজনের কাছ থেকে ফরহাদ টাকা নিয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে সালিসের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও জানা যায়।
এ ব্যাপারে ফরহাদের ভাই আজাদ হোসেন বলেন, ‘ফরহাদ এখন মালয়েশিয়ায় রয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে অল্প কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিলেও তার বেশির ভাগই শোধ করে গেছেন। বাকি টাকা পরিবারের পক্ষ থেকে মিটিয়ে দেওয়ায় এখন কেউ আর টাকা পাবে না। এলাকার কয়েকজন উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং আমাদের পরিবারের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।’
এ ধরনের আরও পোস্ট
১। বিদেশে জেতে আপনি কত টাকা দিচ্ছেন ?
২। বিদেশে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা (want to go abroad)
৩। Varified your vissa with website (আনার ভিসার সত্যতা যাচাই করুণ )
কথাগুলো বলতে বলতে গলা ধরে আসে পাবনার বেড়া উপজেলার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের যুবক আওয়াল মিয়ার। তার মতো একই অবস্থা উপজেলার আরও ২০ জনের।
প্রতারিত হওয়া কয়েকজন অভিযোগ করেন, প্রতাপপুর গ্রামের বাচ্চু শেখের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৩) কয়েক বছর মালয়েশিয়ায় চাকরি করে দেশে ফেরেন। এরপর ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানিতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিজ গ্রামের সহোদর আবদুল আওয়াল ও বাহাদুর মিয়ার কাছ থেকে তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা নেন। এ ছাড়া একই কথা বলে একই গ্রামের শুকুর আলী ও রাসেল, বসন্তপুর গ্রামের শাজাহান শেখ, রঘুনাথপুর গ্রামের সুরুজ মিয়া, জালাল মোল্লা, নগরবাড়ী ঘাটের সুরুজ কামার ও শাজাহান কামার, শহীদনগরের মনসুর আলীসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০ যুবকের কাছ থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা করে নেন। এভাবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা সংগ্রহ করার পর তিনি ওই যুবকদের মালয়েশিয়া না পাঠিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এ অবস্থায় আবদুল আউয়াল ও বাহাদুর মিয়াসহ প্রতারিত কয়েকজন টাকা ফেরতের জন্য তাঁর ওপর চাপ দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করেন। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিয়ে তিনি গা-ঢাকা দেন।
রঘুনাথপুর গ্রামের শাহীন শেখ বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমি বন্ধক রাইখ্যা আর ফেরি ঘাটের ছোড মুদি দোকানটা বিক্রি কইরা ফরহাদকে দেড় লাখ টাকা দিছি। এখন আমি নিঃস্ব হয়া পরিবারপরিজন নিয়া খায়া না খায়া দিন কাটাইতেছি।’
এদিকে টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতারিত কয়েকজন পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) লিখিত অভিযোগ করেন। এতে পরিষদ সালিসের আয়োজন করলে সেখানে ফরহাদের বাবা বাচ্চু শেখসহ পরিবারের কয়েকজন উপস্থিত হন। সালিসে টাকা নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় বাচ্চু শেখ ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রতারিত পাঁচ যুবককে ৪০ হাজার করে মোট দুই লাখ টাকা ফেরত দেন। সালিসে বাচ্চু শেখ জানান, ফরহাদ পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে গেছে। সেখান থেকে সে টাকা পাঠালে বাকি টাকা শোধ করা হবে।
পুরানভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এ এম রফিকউল্লাহ বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে ফরহাদ আমার এলাকার ছয়জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। অন্য এলাকার কয়েকজনের কাছ থেকেও সে টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে পরিষদে সালিসের আয়োজন করা হলে আমার মাধ্যমে ফরহাদের বাবা বাচ্চু শেখ পাঁচজনকে ৪০ হাজার করে টাকা ফেরত দেন। বাকিদেরও কিছু কিছু করে ফেরত দিয়েছেন বলে শুনেছি।’
এদিকে টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতারিতরা ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) কালীপদ পোদ্দারকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে কালীপদ পোদ্দার জানান, প্রাথমিক তদন্তে কয়েকজনের কাছ থেকে ফরহাদ টাকা নিয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে সালিসের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও জানা যায়।
এ ব্যাপারে ফরহাদের ভাই আজাদ হোসেন বলেন, ‘ফরহাদ এখন মালয়েশিয়ায় রয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে অল্প কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিলেও তার বেশির ভাগই শোধ করে গেছেন। বাকি টাকা পরিবারের পক্ষ থেকে মিটিয়ে দেওয়ায় এখন কেউ আর টাকা পাবে না। এলাকার কয়েকজন উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং আমাদের পরিবারের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।’
এ ধরনের আরও পোস্ট
১। বিদেশে জেতে আপনি কত টাকা দিচ্ছেন ?
২। বিদেশে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা (want to go abroad)
৩। Varified your vissa with website (আনার ভিসার সত্যতা যাচাই করুণ )