‘বিদেশে যাবেন? ভালো কথা। কিন্তু প্রতারিত যেন না হতে হয়। আ র প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে প্রথমেই দরকার সচেতনতা। আপনি যে দেশেই যাবেন, আগে সে দেশের শ্রম আ ইন সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। কাদের মাধ্যমে যাচ্ছেন, সেটা আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে। জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো নামে সরকারের একটি বিভাগ আছে। এখান থেকে তথ্য নিয়ে আপনি নিজেই জানতে পারবেন যে আপনি প্রতারিত হচ্ছেন, নাকি সত্যিই একটি চাকরি করতে যাচ্ছেন।’ বলছিলেন জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম।
জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে কাজ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রামরু (RMMRU)। এর প্রকল্প পরিচালক তাসনিম সিদ্দিকী মনে করেন, যিনি বিদেশে যাবেন, তাঁকে কয়েকটি বিষয় এর আগে প্রথমে বিবেচনায় আনতে হবে। কেন যাচ্ছেন, কী কাজে যাচ্ছেন, যাওয়ার পর কী কাজ করে কত টাকা পাবেন—এসব বিষয়ে থাকতে হবে পরিষ্কার ধারণা। এরপর ভাবতে হবে, যিনি যাচ্ছেন, তিনি কত টাকা ঋণ করে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর পোষ্য যাদের রেখে যাচ্ছেন, তাদের জন্য কী রেখে যাচ্ছেন। তারা কীভাবে চলবে? এরপর বিবেচনায় নিয়ে আসতে হবে, যত টাকা দিয়ে তিনি বিদেশে যাচ্ছেন, সেই টাকা দিয়ে তিনি দেশেই কোনো কাজ করতে পারেন কি না। তিনি বলেন, সবকিছু হিসাব করে যদি দেখা যায় যে বিদেশে যাওয়াটাই লাভজনক, তবেই বিদেশযাত্রার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ধরা যাক, একজনের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়ায়। তিনি বেকার যুবক। বিদেশে যেতে চান চাকরি করার জন্য। কিন্তু কীভাবে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তা তাঁর জানা নেই। এ জন্য তাঁকে প্রথমেই ভাবতে হবে, কোন কাজে তিনি দক্ষ। পরে ঠিক করবেন, কোন দেশে যেতে চান। এরপর খোঁজ নিন, কোন কোন দেশে বাংলাদেশের লোক যাচ্ছে। সংবাদপত্রের মাধ্যমেও জানা যাবে বিদেশে লোক নিয়োগের খবরাখবর।
তবে নিয়োগের এসব খবর শুনে বা বিজ্ঞাপন দেখেই তার পেছনে প্রথমে না ছুটে ভালো করে খোঁজখবর নিতে হবে। মাঝখানের দালাল এড়িয়ে সরাসরি কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। কারণ, দালাল ধরলেই খরচ বেড়ে যাবে। তবে যে রিক্রুটিং এজেন্সিতে যাচ্ছেন ওই রিক্রুটিং এজেন্সি বৈধ কি না, রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স নম্বর ঠিক আছে কি না, খোঁজখবর নিন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ৮৯/২ কাকরাইল অফিসে (ফোন: ৯৩৫৭৯৭২) অথবা http://www.ovijogbmet.org ওয়েবসাইটে গিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারেন। খোঁজ নিতে পারেন দেশের ২১টি জেলার আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোয়—বরিশালের কালীবাড়ি রোড, বগুড়ার গোহাইল রোডের খান্দার, বান্দরবানের মাস্টার শপিং সেন্টার, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, কুমিল্লার ঝাউতলা, ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেন রোড, দিনাজপুরের ঘাসিপাড়া, ফরিদপুরের মোল্লাবাড়ি রোড, জামালপুর সদর থানার বজরা পাড়া, যশোরের নিউ মার্কেট, খুলনার খান জাহান আলী রোড, কুষ্টিয়ার বিসি রোড, ময়মনসিংহের জেসি গুহ রোড, নোয়াখালীর মাইজদী বাজার রোড, পাবনার ঢাকা রোড, পটুয়াখালীর কলেজ রোড, রাজশাহীর গ্রেটার রোড, রাঙামাটির কালিন্দীপুর, রংপুরের উত্তর গুপ্তাপাড়া, সিলেটের পাঠানটোলা এবং টাঙ্গাইলের আবদুল মজিদ ভুইয়া লেনে।
কোন কোন দেশে কী কী কাজে লোক নেওয়া হবে, তার বিবরণ জানা যাওয়ার কথা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও, এ ছাড়া সংবাদপত্রের মাধ্যমেও জানা যাবে বিদেশে লোক নিয়োগের খবরাখবর। আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে গিয়ে নিজের নাম নিবন্ধন করেন অনেকেই।
এবার আসুন টাকার কথায়। অনেক সময়ই বলা হবে যে ‘১০ লাখ টাকা দিন, আপনাকে জাপান বা আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হবে।’ এসবে বিশ্বাস না করে বরং আগে জেনে নিতে হবে, কোন দেশের জন্য কত টাকা প্রয়োজন, তা রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। চেষ্টা করুন এই টাকায় যাওয়া যায় কি না।
মধ্যপ্রাচ্য অর্থাত্ সৌদি আরব, দুবাই, কাতার, কুয়েত এবং মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যেতে পুরুষের জন্য খরচ পড়বে ৮৪ হাজার টাকা; নারীর জন্য নির্ধারণ করা আছে ২০ হাজার টাকা। নারীর বিমান ভাড়ার টাকা সব সময় বিদেশি কোম্পানির মালিকেরা দিয়ে থাকেন। ইতালি ও ইউরোপের দেশগুলোর জন্য সরকার-নির্ধারিত টাকার অঙ্ক হচ্ছে দুই লাখ ১০ হাজার। আবার কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যেতে খরচ পড়বে ৫৩ হাজার টাকা—জানালেন নুরুল ইসলাম।
রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে টাকা জমা দেওয়ার পর যখন পাসপোর্টে ভিসা লাগানো হয় এবং ওয়ার্ক পারমিট আনা হয়, তখন সেগুলো সঠিক কি না, তা দেখার জন্য জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া যায়। জনশক্তি ব্যুরোতে ভিসা জাল কি না, তা পরীক্ষা করানো যায়। যে ভিসা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সেই ভিসা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে পাঠিয়ে জেনে নেয়, ভিসাটি ঠিক আছে কি না।
বিদেশে যাওয়ার আগে যা যা করণীয়
রিক্রুটিং এজেন্সি বৈধ কি না, তা দেখে নিন।
কোনো ব্যক্তি বা দালালের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবেন না।
যে দেশে যাচ্ছেন, সেই দেশের শ্রম আ ইন জেনে নিন।
বিদেশে গিয়ে যদি চাকরি নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তবে তাত্ক্ষণিকভাবে সেই দেশে অবস্থিত নিজ দেশের দূতাবাসকে অবহিত করুন।
সরকার-নির্ধারিত বেশি অর্থ চাইলে বুঝতে হবে, এখানে অসত্ কোনো উদ্দেশ্য আছে। সঙ্গে সঙ্গে তা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বিভাগে জানান।
বিদেশে গিয়ে বৈধপথে টাকা পাঠান। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে সেই টাকা মার যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চাকরির চাহিদাপত্র পরীক্ষা করিয়ে নিন।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিন।
বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে নিন।
যদি কোথাও আপনি প্রতারণার শিকার হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন, তবে http://www.ovijogbmet.org এই ঠিকানায় আপনি অভিযোগ জানান।
সচেতন হোন
সাধারণত কয়েকভাবে বাংলাদেশ থেকে মানুষ বিদেশে চাকরির জন্য যায়। এক হচ্ছে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। এর বাইরে যাদের স্বজন দেশের বাইরে থাকেন অথবা দেশের বাইরে থেকে যাঁরা আসেন, তাঁরা অনেক সময় ভিসা নিয়ে আসেন; আ র তাঁরা বেশি টাকার বিনিময়ে লোক নিয়ে যান। অনেক সময় দেখা যায়, এঁরাই গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। এ ছাড়া ভ্রমণ-ভিসা ও লেখাপড়ার ভিসা দিয়ে দালালেরা বিদেশে লোক নিয়ে যায় এবং তাঁরা প্রতারিত হন। এ ক্ষেত্রে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এখানে খুব বেশি সহযোগিতা করতে পারবে না বা এর দায়ও নেবে না।
এ ব্যাপারে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘এ ধরনের সমস্যাগুলোর দায় আমরা নেব না। কারণ, এগুলো বৈধ পথে সম্পন্ন হয়নি। এ জন্য আমাদের জনগণের সচেতনতা দরকার। একজন লোককে যখন বলা হয়, “১০ লাখ টাকা দাও, আমি আমেরিকা পাঠিয়ে দিব।” তখন তাঁকে আগে দেখতে হবে, ১০ লাখ টাকা দিয়ে সেখানে গিয়ে তিনি কত টাকার বেতনে চাকরি করবেন। কত বছরে সেই টাকা উঠে আসবে। আ র বিদেশে যেতে কখনোই এত টাকার প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়টি আমাদের বুঝতে হবে।’
নুরুল ইসলাম জানান, একমাত্র ইসরায়েল ছাড়া পৃথিবীর আ র সব দেশেই বাংলাদেশিরা চাকরির জন্য যেতে পারেন। এখন সারা বিশ্বে ৬৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। এরা বৈধ পথেই চাকরি নিয়ে বিদেশে গেছেন। কিন্তু অবৈধ পথে কতজন বাংলাদেশি গেছেন, এর সংখ্যা কারও জানা নেই।
জনশক্তি ব্যুরোর দেওয়া হিসাবে জানা গেছে, সরকারি কর্মব্যস্ত দিনে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চাকরি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এঁরা যাচ্ছেন বৈধ পথে। এঁদের মধ্যে পেশাগত অর্থাত্ চিকিত্সক, প্রকৌশলীরা যাচ্ছেন শতকরা তিন ভাগ। দক্ষ অর্থাত্ কাজ শিখে যাচ্ছেন যেমন—রাজমিস্ত্রি, ঝালাইকারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গাড়ি-চালক—এসব পেশায় শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ। সামান্য কিছু কাজ শিখে যাচ্ছেন শতকরা ১৭ ভাগ। একদমই কাজ না জেনে যাচ্ছেন শতকরা ৫০ ভাগ মানুষ। এর বাইরে অবৈধভাবে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা কেউ ফেরত আসছেন, কেউ বা কষ্ট স্বীকার করে হলেও লুকিয়ে সেখানে চাকরি করছেন।
কোন পেশার বেশি মূল্য
সৌদি আ রব থেকে ফিরে এসেছেন আবদুল হান্নান। ২১ জানুয়ারি রিটার্ন টিকিট চূড়ান্ত করতে এসেছেন হোটেল সোনারগাঁওয়ের সৌদি এয়ারলাইনস দপ্তরে। তিনি জানালেন, কোনো কিছু না শিখে চার বছর আগে গিয়েছিলেন। এ জন্য প্রথম দিকে সামান্য কিছু টাকা পেতেন। তাই দিয়ে নিজের ব্যয় মিটিয়ে বাকি সামান্য টাকা দেশে পাঠাতেন। কিন্তু যখন তিনি কাজ শিখলেন, অভিজ্ঞ হলেন, তখন তিনি তিন গুণ বেশি অর্থ পেয়েছেন। তিনি আ রও জানালেন, চিকিত্সক, প্রকৌশলী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পেশায় যাঁরা যান, তাঁরা অনেক টাকা বেতনে যেতে পারেন। আ র শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে ড্রাইভার, রাজমিস্ত্রি, ওয়েল্ডিংয়ের কাজ জানা শ্রমিক ভালো বেতন পেতে পারেন।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফিরে এসেছেন নজরুল। ১০ বছর ছিলেন সেখানে। বললেন, ভাষা জানা থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেক ভালো বেতনে চাকরি করা যায়। সেখানে ড্রাইভার থেকে শুরু করে বিক্রেতার কাজ করেই মাসে ভালো অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। নির্মাণশ্রমিকেরও সেখানে অনেক বেতন বলে তিনি জানালেন।
দুবাইতে নির্মাণশ্রমিকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মরুভূমি অঞ্চলে বড় বড় স্থাপনা গড়ে উঠছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে পাঁচতারকা হোটেলের সংখ্যা। দুবাই থেকে এসে আফসার মিয়া জানালেন, ‘এখন সেখানে একজন নির্মাণশ্রমিক যদি ১০ বছর কাজ করতে পারেন, তবে তিনি যে টাকা নিয়ে আসতে পারবেন, তাঁকে ভবিষ্যতে আ র চিন্তা করতে হবে না। আ র পাঁচতারকা হোটেলে অনেক শিক্ষিত ছেলেমেয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের অনেকেই সেখানে ভালো বেতনে চাকরি করছেন। অনেক আরামের চাকরি।’
কোন জেলা থেকে কত লোক যাচ্ছে
জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের পরিসংখ্যান মতে, টাঙ্গাইল জেলা থেকে প্রতিবছর সবচেয়ে বেশি মানুষ বৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এর পরই আছে গাজীপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও ময়মনসিংহ জেলা। তবে আস্তে আস্তে দেশের অন্যান্য জেলা শহর থেকেও চাকরি নিয়ে মানুষের বিদেশে পাড়ি জমানোর প্রবণতা বাড়ছে।
প্রতারণা ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে
প্রথমত, সরকার এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ এখন বিদেশে গিয়ে শ্রমিকদের যাতে প্রতারিত না হয়, সে জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক। তিনি জানান, ‘আমরা জানি, একজন মানুষ অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়ে যায়। তাঁর স্বপ্নটা ভেঙে যাওয়া মানে পুরো পরিবারটি ভেঙে যাওয়া। এ জন্য বিদেশে যেতে ইচ্ছুক এমন যে কাউকে আমরা সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা পরিচালক উইং কমান্ডার মো. শাহেদুর রহমান বললেন, ‘সরকার এখন বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। এই বিমানবন্দরেই আমরা দেখি, অনেকেই প্রতারিত হয়ে ফিরে আসছেন। তখন নিজের কাছেই কষ্ট লাগে। আমরা নিরাপত্তার পাশাপাশি পুরো বিমানবন্দর সিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনে দেখি, যেন কোনো দালাল শ্রেণীর মানুষ ভিড় করতে না পারে। অন্তত এই যাওয়ার জায়গাটিতে কেউ যাতে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিতে না পারে, সে জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন। শুধু বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে নয়, যাঁরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠাচ্ছেন, তাঁরা যখন আসেন, তখন একটা বিষয় ভালোভাবে খেয়াল রাখি, যেন তাঁকে হেনস্তা না হতে হয়। তাদের ব্যাগও এখন আগের মতো খুব বেশি তল্লাশি করা হয় না। আমরা মনে করি, যদি সবাই সচেতন হই এবং বিদেশে যাওয়ার আগে সবকিছু জেনে নিই, তাহলে প্রতারণা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।’
বিদেশে যাওয়ার আগে নিতে পারেন প্রশিক্ষণ
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বিদেশে যেতে আগ্রহী ব্যক্তিদের কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। যেসব স্থানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেগুলো হলো—নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত বাংলাদেশ মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, ঢাকার মিরপুরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি), মিরপুরেরই বাংলা-জার্মান টিটিসি, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ অঞ্চলের চট্টগ্রাম টিটিসি, রাজশাহীর সপুরায় রাজশাহী টিটিসি, কুমিল্লার কোটবাড়ির কুমিল্লা টিটিসি, ফরিদপুরের শ্রীঅঙ্গনে ফরিদপুর টিটিসি, রাঙামাটির কলেজ গেটে রাঙামাটি টিটিসি, খুলনার তেলিগাতীতে খুলনা টিটিসি, ময়মনসিংহের মাসকান্দায় ময়মনসিংহ টিটিসি, বগুড়ার সান্তাহার রোডে বগুড়া টিটিসি এবং বরিশালের সিঅ্যান্ডবি রোডে বরিশাল টিটিসি।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে জানানো হয়েছে, মোট ৩৯টি বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (মেরিন টেকনোলজি), ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (শিপ বিল্ডিং টেকনোলজি), মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন আর্টিফিশার, শিপ ফেব্রিকেশন, শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড মেকানিক্যাল ড্রাফটিং, প্লাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং, জেনারেল মেকানিকস, মেশিন টুলস অপারেশন, ওয়েল্ডিং ওয়ার্কার্স, সিভিল কনস্ট্রাকশন, কম্পিউটার অপারেশন, গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিংসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছে অপর একটি প্রতিষ্ঠান ‘ধানসিঁড়ি’। এর ম্যানেজার (অপারেশন) অনল রায়হান বললেন, ‘আসলে যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেই প্রশিক্ষণ অনেক সময় কাজে লাগে না। কারণ, এখান থেকে নির্মাণশ্রমিকের প্রশিক্ষণ নিয়ে যখন একজন মানুষ সৌদি আরবে যান, যাওয়ার পর সেখানে গিয়ে যে যন্ত্রপাতি দেখেন, তখন সেগুলো আ র আমাদের লোকজন ব্যবহার করতে পারেন না। ফলে তাঁর বেতন কমে যায়। এ জন্য সেই মানের প্রশিক্ষণ না দিতে পারলে আসলে জনশক্তির দিকটি উন্নয়ন করা যাবে না।’
পোস্ট বাইঃ আতিক নরসিংদী
এ ধরনের আরও পোস্ট
১। বিদেশে যাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা (want to go abroad)
২। Varified your vissa with website
৩। বিদেশে যাওয়ার ফাঁদে পড়ে ২০ যুবক নিঃসব