সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর হবে
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী
ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সাংবিধানিকভাবে আগামী নির্বাচন ও
ক্ষমতা হস্তান্তরের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, স্থায়ী রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা আনতে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের
ধারা কোন না কোনভাবে শুরু করতে হবে। উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে ক্ষমতার
পালাবদলের ক্ষেত্রে সংবিধান মানতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন,
ভবিষ্যতে যাতে আর কেউ হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে
ক্ষমতা দখল করতে না পারে সেজন্য আমরা এ প্রক্রিয়া শুরু করে যেতে চাই। গতকাল শুক্রবার রাতে গণভবনে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী তার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন। সূচনা বক্তব্যের পর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা জায়গা থেকে শুরু করতে চাই। আর তা হলো আগামী প্রজন্মের জন্য। যাতে ভবিষ্যতে তাদের আর কষ্ট না হয়, একটা নিয়মের মধ্য দিয়েই আসে। তিনি বলেন, গত ৩৮ বছরে একবারও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। একমাত্র ২০০১ সালে আওয়ামী লীগই সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। ওয়ান ইলেভেনের পরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আগামীতে আর কোন অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় আসতে না পারে। বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে সাম্প্রতিক টেলি সংলাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি দুই দিনের আলোচনা শুরু করার দাবি করেছিলেন। তার দেয়া সময়ের মধ্যেই আমি তাকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করেছিলাম। তাকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম ঘোষিত ৬০ ঘণ্টার হরতাল প্রত্যাহারের। কিন্তু সেই হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে কী পেলেন তিনি? সরকার হটানোর নামে হরতাল করে ২০ জন মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এমনকি বিচারপতিসহ অনেকের বাড়িতে বোমা হামলা করে দেশেরই ক্ষতি করেছেন। কিন্তু সরকারকে তো ক্ষমতা থেকে হটাতে পারলেন না।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদে বর্তমানে ৯০ ভাগ সংসদ সদস্য আমাদের। এরপরও সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। সংসদে যাদের প্রতিনিধি আছে তাদের নিয়েই এই সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হবে। যাতে নির্বাচন কিভাবে হয় সেটা সকলে দেখতে পারে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বেগম মতিয়া চৌধুরী, এইচটি ইমাম, ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, ড. গওহর রিজভী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহিম, শাহ রফিকুল বারী চৌধুরী, এ এইচ সালাউদ্দিন মাহমুদ, কর্ণেল (অব.) আব্দুল লতিফ মল্লিক, মফিজুল হক বেবু, মিসেস আমেনা বারী, এডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা, এজাজ আহমেদ মুক্তা, অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী, দপ্তর সম্পাদক এম সালাউদ্দিন আহমেদ।