রাজধানীতে হরতালপূর্ব নাশকতা
অগ্নিসংযোগ ভাংচুর ককটেল নিক্ষেপ :সারাদেশে ১৮ দলের বিক্ষোভ, আটক ৭২
বিশেষ প্রতিনিধি
বিএনপিসহ ১৮ দলের ডাকা আজ সোমবার থেকে টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালকে সামনে রেখে গতকাল রবিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন, ভাংচুর ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অপরদিকে কাঁটাবন এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন আনোয়ার হোসেন (৩০) নামে এক যুবক। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অবিস্ফোরিত একটি শক্তিশালী বোমা। এছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টায় মৌচাকে নিক্ষিপ্ত বোমায় আহত হয়েছেন রিকশাচালক আব্দুল মোতালেব (৫০)। আহত দুজনকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সকাল নয়টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় জামায়াত-শিবির একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় মিছিলকারীরা বিআরটিসিসহ চারটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে পুলিশের ধাওয়ার মুখে মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। সকাল নয়টার দিকে খিলগাঁও তালতলা এলাকায় জামায়াত-শিবির একটি মিছিল বের করে ভাংচুরের চেষ্টা করে। পুলিশের উপস্থিতিতে দ্রুত তারা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় একই সময় ফার্মগেট খামারবাড়িতেও একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়। বাড্ডার লিংক রোড এলাকায় সকালে জামায়াত-শিবির মিছিল বের করে একটি বাস ভাংচুরের চেষ্টা করে। উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে খুব ভোরে কে বা কারা যুবলীগ অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। একইভাবে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেয়া হয়। উভয় ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিভিয়ে ফেলে। মতিঝিলের টিঅ্যান্ডটি কলোনির সামনে সকাল ১০টার দিকে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা ব্যাংকের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয় কয়েকজন যুবক। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। প্রায় একই সময় গুলিস্তানের আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে আরেকটি যাত্রীবাহী বাসে যাত্রীবেশে কে বা কারা আগুন দেয়। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নেভায়।
দুপুর ১টার দিকে নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের পাশে হোটেল অরচার্ড প্লাজার সামনে একটি প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয় কয়েক যুবক। এ সময় তারা পর পর কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটায়। পল্টন ও বিজয়নগর এলাকায় বিকাল চারটার দিকে পর পর ৬/৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
দুপুর দুইটার দিকে মহাখালীর তিতুমীর কলেজের সামনে পর পর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় কলেজের বিপরীতে পর্যটন হোটেলের সামনে থাকা একটি মিনিবাসে হঠাত্ আগুন জ্বলতে দেখা যায়। পরে স্থানীয়রাই তা নিভিয়ে ফেলেন।
মতিঝিলের সোনালী ব্যাংকের সামনে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সোনালী ব্যাংকের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার সময় আগুন দেয়া হয় গুলশান বারিধারায় এবং মিরপুর পল্লবীতে দুটি গাড়িতে।
সারা দেশে ১৮ দলের বিক্ষোভ, আটক ৭২
ইত্তেফাক ডেস্ক
হরতালের সমর্থনে গতকাল রবিবার বিকালে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ১৮ দল। এ সময় কোথাও কোথাও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। চলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। টঙ্গীতে পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম শাহানশাহসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। সকালে কুমিল্লায় এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়ক দুই ঘন্টা অবরোধ করে রাখে বিএনপি কর্মীরা। শনিবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার পর্যন্ত পুলিশ ৭২ জন বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সারা দেশে থেকে আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, রাজশাহীতে ৩৬ জন, বরিশালে ৭ জন, কুমিল্লায় ১ জন, রংপুরে তিনজন, গলাচিপায় ৪ জন, দিনাজপুরে ৮ জন, মতলবে ১ জন, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় ৭ জন ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে ৫ জন বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতারা করা হয়েছে। মুক্তাগাছা থানার ওসি মীর রকিবুল হক জানান, সেখানে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ৫ বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, রাজশাহী, বরিশাল, টঙ্গী, মাদারীপুর, দিনাজপুরের কাহারোল, বরগুনা, ঝিনাইদহের মহেশপুর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, ঝিনাইদহ, কুমিল্লার হোমনা থেকে আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের খবর দিয়েছেন।
অগ্নিসংযোগ ভাংচুর ককটেল নিক্ষেপ :সারাদেশে ১৮ দলের বিক্ষোভ, আটক ৭২
বিশেষ প্রতিনিধি

সকাল নয়টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় জামায়াত-শিবির একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় মিছিলকারীরা বিআরটিসিসহ চারটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে পুলিশের ধাওয়ার মুখে মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। সকাল নয়টার দিকে খিলগাঁও তালতলা এলাকায় জামায়াত-শিবির একটি মিছিল বের করে ভাংচুরের চেষ্টা করে। পুলিশের উপস্থিতিতে দ্রুত তারা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় একই সময় ফার্মগেট খামারবাড়িতেও একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়। বাড্ডার লিংক রোড এলাকায় সকালে জামায়াত-শিবির মিছিল বের করে একটি বাস ভাংচুরের চেষ্টা করে। উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে খুব ভোরে কে বা কারা যুবলীগ অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। একইভাবে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেয়া হয়। উভয় ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিভিয়ে ফেলে। মতিঝিলের টিঅ্যান্ডটি কলোনির সামনে সকাল ১০টার দিকে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা ব্যাংকের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয় কয়েকজন যুবক। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। প্রায় একই সময় গুলিস্তানের আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে আরেকটি যাত্রীবাহী বাসে যাত্রীবেশে কে বা কারা আগুন দেয়। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নেভায়।
দুপুর ১টার দিকে নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের পাশে হোটেল অরচার্ড প্লাজার সামনে একটি প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয় কয়েক যুবক। এ সময় তারা পর পর কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটায়। পল্টন ও বিজয়নগর এলাকায় বিকাল চারটার দিকে পর পর ৬/৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
দুপুর দুইটার দিকে মহাখালীর তিতুমীর কলেজের সামনে পর পর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় কলেজের বিপরীতে পর্যটন হোটেলের সামনে থাকা একটি মিনিবাসে হঠাত্ আগুন জ্বলতে দেখা যায়। পরে স্থানীয়রাই তা নিভিয়ে ফেলেন।
মতিঝিলের সোনালী ব্যাংকের সামনে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সোনালী ব্যাংকের একটি স্টাফ বাসে আগুন দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার সময় আগুন দেয়া হয় গুলশান বারিধারায় এবং মিরপুর পল্লবীতে দুটি গাড়িতে।
সারা দেশে ১৮ দলের বিক্ষোভ, আটক ৭২
ইত্তেফাক ডেস্ক
হরতালের সমর্থনে গতকাল রবিবার বিকালে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ১৮ দল। এ সময় কোথাও কোথাও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। চলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। টঙ্গীতে পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম শাহানশাহসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। সকালে কুমিল্লায় এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়ক দুই ঘন্টা অবরোধ করে রাখে বিএনপি কর্মীরা। শনিবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার পর্যন্ত পুলিশ ৭২ জন বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সারা দেশে থেকে আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, রাজশাহীতে ৩৬ জন, বরিশালে ৭ জন, কুমিল্লায় ১ জন, রংপুরে তিনজন, গলাচিপায় ৪ জন, দিনাজপুরে ৮ জন, মতলবে ১ জন, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় ৭ জন ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে ৫ জন বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতারা করা হয়েছে। মুক্তাগাছা থানার ওসি মীর রকিবুল হক জানান, সেখানে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ৫ বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, রাজশাহী, বরিশাল, টঙ্গী, মাদারীপুর, দিনাজপুরের কাহারোল, বরগুনা, ঝিনাইদহের মহেশপুর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, ঝিনাইদহ, কুমিল্লার হোমনা থেকে আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের খবর দিয়েছেন।